স্বৈরাচারের ডায়রি

তারিক আহমেদ সিদ্দিক - গুম-খুনের মাস্টারমাইন্ড

August 11, 2024
পরিচয়
তারিক আহমেদ সিদ্দিক শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিকের ছোট ভাই। বিরোধীদলীয় নেতা থাকাকালে হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাপ্রধান ছিলেন তারিক সিদ্দিক। বৃটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের আপন চাচা তিনি। তারিক সিদ্দিক ২০১৪ সালে হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর পুনরায় তাকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে ২০২৪ এর জানুয়ারিতে উপদেষ্টা পদে নিয়োগের অবসান হলেও একইদিনে তাকে মন্ত্রী পদমর্যাদায় উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন শেখ হাসিনা। হাসিনার নির্দেশে বিরোধী মতকে দমনে র‍্যাব-পুলিশ-সেনাবাহিনী ব্যবহার করে গুম-খুনের প্রধান কারিগর এই ভয়ঙ্কর লোক। সামরিক বাহিনীর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল লেনদেন থেকে কমিশন নেয়া এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখল করাই ছিল যার কাজ।

আয়নাঘরের কারিগর

আয়নাঘরের মূল পরিকল্পনাকারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের এবং সামরিক বাহিনীর অনেক সদস্যদের দমন-পীড়ন চালানো হত আয়নাঘর’ নামে গোপন বন্দিশালায়। অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী সাংবাদিকদের জানান, সামরিক বাহিনীর কিছু কর্মকর্তাকে ব্যবহার করে তারেক সিদ্দিক গুম-খুনের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং বিভিন্ন প্রকল্প থেকে কমিশন নিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায়ও তার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
[পত্রিকা কাটিং - ]
আয়নাঘরের নির্মম নির্যাতন
বর্বরোচিত কায়দায় আয়নাঘরের বন্দীদের নির্যাতন করতো হাসিনার বাহিনী। আলো-বাতাসহীন চার দেয়ালের ছোট ছোট খুপড়িতে বছরের পর বছর বন্দী থাকায় নানা অসুখে জর্জরিত হয়ে যেতেন তাঁরা। রোলিং চেয়ারে ঘুরানো, ইলেক্ট্রিক শক দেয়া, মারধোর ছিল প্রতিদিনের রুটিন।
আয়নাঘরে গুম-খুনের সরাসরি নির্দেশদাতা ছিলেন শেখ হাসিনা
স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা নিজেই গুম ও হত্যার নির্দেশদাতা ছিলেন। তার সরাসরি নির্দেশে গুম ও হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) এক প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এমন সব ভয়ংকর তথ্য উঠে এসেছে।
[পত্রিকা কাটিং - ]
এনটিএমসির মাধ্যমে আড়িপাতে আয়নাঘরের কারিগরেরা
তারিক আহমেদ সিদ্দিকের তত্বাবধানে দীর্ঘদিন ধরে নাগরিকদের ফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনৈতিকভাবে আড়িপাতার কাজ করে আসছিল বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি)। এ কাজে প্রতিষ্ঠানটিকে কারিগরি সহায়তা ও অবৈধ যন্ত্রাংশ সরবরাহ করে বিশ্বব্যাংকের কালো তালিকাভুক্ত ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় থাকা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি।
[পত্রিকা কাটিং - ]

গুম-খুনের মাস্টারমাইন্ড তারিক আহমেদ সিদ্দিক

“মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকারের’ ভাষ্যমতে, গত জুন পর্যন্ত ৭০৯ জন গুমের শিকার হয়েছেন। গুমের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশনে ইতোমধ্যে প্রায় ৪৫০টি অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। একইভাবে পতিত সরকারের দীর্ঘ শাসনামলে কয়েক হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটে। এসব ভয়ংকর অপরাধের বেশির ভাগের মূল পরিকল্পনাকারী বা মাস্টারমাইন্ড ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক। তার সহযোগী হয়ে নির্দেশদাতার ভূমিকায় ছিলেন বরখাস্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, সাবেক আইজিপি এ একে এম শহীদুল হক ও বেনজীর আহমেদ।”
[পত্রিকা কাটিং - ]
গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড
মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকারের’ তথ্য অনুযায়ী, ৭০৯ জন গুমের শিকার, যার মধ্যে ৮৩ জনের লাশ পাওয়া গেছে, ১৫৫ জন এখনও নিখোঁজ। গুমের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে তারিক আহমেদ সিদ্দিক, জিয়াউল আহসান, শহীদুল হক ও বেনজীর আহমেদের নাম উঠে এসেছে। ভারতের সিলং থেকে ফিরে আসা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, আয়নাঘর থেকে ফিরে আসা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আযমী, লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান বীরপ্রতীক, ব্যারিস্টার আরমানসহ অনেক ভুক্তভোগী গুম কমিশনে অভিযোগ করেছেন।
জিয়াকে সরাসরি নির্দেশ দিতেন তারিক সিদ্দীক
গুম-খুনের অন্যতম কারিগর গ্রেফতার হওয়া মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান রিমান্ডে গোয়েন্দাদের জানান, গত ১৫ বছরে হত্যা, গুম এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখলের নেতৃত্বে ছিলেন সামরিক বাহিনীর কিছু কর্মকর্তা, যাদের প্রধান ছিলেন তারেক সিদ্দিক। ব্যবসায়ীদের ধরে এনে শেখ হাসিনার নির্দেশে কাজ করাতে বাধ্য করা হতো, অস্বীকৃতি জানালে তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আয়নাঘরে বন্দি করে নির্যাতন করা হতো। ডিজিএফআইকেও রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হতো।
সাবেক এনটিএমসি প্রধান জিয়াউল আহসান তার সময়কালে ফোন নজরদারির মাধ্যমে রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের সফটওয়্যারে প্রবেশ করে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়।
[পত্রিকা কাটিং - ]
গুম-খুন থেকে রেহাই পাননি আর্মি অফিসাররাও
সামরিক বাহিনীর অফিসারদেরকেও আওয়ামী সরকারের আমলে নির্মমভাবে গুম-খুন করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের সাথে শেখ পরিবারের সদস্যরা সরাসরি জড়িত থাকতেন। শেখ হাসিনার ছোটো বোন শেখ রেহানার ভাসুর মেজর জেনারেল তারিক সিদ্দিকের সরাসরি তত্বাবধানে এসব গুম-খুন পরিচালিত হতো। গুম-খুনের প্রধান কারিগর গ্রেফতার হওয়া মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান রিমান্ডে গোয়েন্দাদের জানান, গত ১৫ বছরে হত্যা, গুম এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখলের নেতৃত্বে ছিলেন সামরিক বাহিনীর কিছু কর্মকর্তা, যাদের প্রধান ছিলেন তারেক সিদ্দিক। ব্যবসায়ীদের ধরে এনে শেখ হাসিনার নির্দেশে কাজ করাতে বাধ্য করা হতো, অস্বীকৃতি জানালে তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আয়নাঘরে বন্দি করে নির্যাতন করা হতো।
[পত্রিকা কাটিং - ]
কুখ্যাত ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভে মেজর সিনহাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
[পত্রিকা কাটিং - ]
সামরিক বাহিনীর পোশাক পরিহিত অবস্থায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমানকে গুম করে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। তিনি বলেন, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’, তৎকালীন সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ ও স্বৈরাচারী আমলে গুমের প্রধান কারিগর মেজর জেনারেল জিয়াউলের নির্দেশনায় তাকে কুখ্যাত আয়নাঘরে বন্দি জীবন কাটাতে হয়েছে। এছাড়া বিগ্রেডিয়ার আজমীকে নিজ বাসা থেকে তুলে এনে দীর্ঘ ১০ বছর গুম করে রাখে হাসিনার অজ্ঞাবহ বাহিনী। ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা অফিসার খুন হওয়ার পর শত শত প্রতিবাদী অফিসারকে গুম-খুন ও মিথ্যা মামলা সাজিয়ে সামরিক বাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
[পত্রিকা কাটিং - ]

পিলখানা হত্যাকাণ্ডেরও মাস্টারমাইন্ড তারিক সিদ্দিক

পিলখানায় ৫৭ জন সামরিক বাহিনীর অফিসারকে হত্যার বিষয়ে সাবেক ক্যাপ্টেন (অব.) ড. খান সুবায়েল বিন রফিক বলেছেন, ‘পুরো ঘটনার মাস্টার মাইন্ড ছিলেন তারিক আহমেদ সিদ্দিক’।
[পত্রিকা কাটিং - ]
নেপথ্যে শেখ হাসিনা
পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে সেনাবাহিনী কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য মেজর জেনারেল (অব:) আবদুল মতিন জানিয়েছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ছিলো। এ হত্যাকাণ্ড অপারেশন ডালভাতের জন্য হয়নি। এটি একটি দীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক। এছাড়া এ ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা। ভারতের মদদে পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় যুক্ত ছিল দেশের কিছু বিশ্বাসঘাতক, ছিল ভারতের চক্রান্ত।
[পত্রিকা কাটিং - ]

দখল ও আধিপত্য বিস্তার

অন্যের ব্যবসা ও সম্পদ দখলে তারিক সিদ্দিকের ভূমিকা
ভিন্নমত দমন, গুম, খুন, নির্যাতন, ব্যবসা দখলের অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন তারিক সিদ্দিক। সামরিক বাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ ও সামরিক প্রশাসনে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল তার। তারিক সিদ্দিক তার বন্ধু সাবেক গ্রুপ ক্যাপ্টেন আলমগীর হোসেনের মাধ্যমে দেশের ও বিদেশের সম্পদ লুটপাট করতেন। এভিয়েশন খাতে তার প্রভাব ছিল ব্যাপক, যেখানে তিনি আলমগীর হোসেনকে মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতেন। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আয় করেছেন। তারিক সিদ্দিক লন্ডনে প্রায় দুই মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে বাড়ি কিনেছেন।
এভালন এভিয়েশন দখল
বিএনপি নেতা এমএ মান্নানের ছেলে ব্যারিস্টার মঞ্জুরুল করিম রনির প্রতিষ্ঠান এভালন এভিয়েশন ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি জোরপূর্বক দখল করেন তারিক সিদ্দিক। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা দিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। এভালনের ৪০ কোটি টাকার মালামাল ও গাড়ি দখল করা হয়।
[পত্রিকা কাটিং-]

লুটপাটের নেতৃত্বে পিছিয়ে ছিল না তারিক সিদ্দিকের স্ত্রী-কন্যা!

অনুসন্ধানে জানা গেছে, তারিক আহমেদ সিদ্দিক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাকলেও প্রভাব বেশি ছিল স্ত্রী শাহনাজের। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার জা হিসেবে বড় প্রভাব রাখতেন তিনি। মূলত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সরকারি কাজ বণ্টন হতো তাঁর বারিধারার ১২২/২ নম্বর বাড়ি থেকে। আওয়ামী লীগের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্লোগানের সুবিধাভোগী ছিল পরিবারটি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কোনো টেন্ডার হলেই তা পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে দিতেন তারিক সিদ্দিক ও তাঁর স্ত্রী শাহনাজ সিদ্দিক। এ জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পেতেন মোটা অঙ্কের কমিশন কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে মালিকানা।
বিদেশে টাকা পাচার
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও তাঁর স্ত্রী শাহনাজ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার এবং তুসুকা গ্রুপ নামে একটি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত থেকে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে সেকেন্ড হোম গড়ে তোলার জন্য অর্থ পাচার করেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের ‘আর্থিক অনিয়মের’ যে অভিযোগ উঠেছে সেখানে শেখ হাসিনার পাশাপাশি টিউলিপ এবং তার চাচার পরিবারের কথাও এসেছে।
দুদকের বরাত দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক নথিতে বলা হয়েছে, “রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তির মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ (জয়) এবং ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক (তারিক আহমেদ সিদ্দিকের ভাতিজি) ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করেছেন, যা পাচার করা হয়েছে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে।” কীভাবে ওই অর্থ ‘পাচার’ করা হয়েছে, সে বিষয়েও একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সারসংক্ষেপে। সেখানে বলা হয়, তারিক আহমেদ সিদ্দিকের স্ত্রী ও মেয়ে প্রচ্ছায়া লিমিটেড (নিবন্ধন সনদ নম্বর সি-৭৫৬৫৯/০৯, তারিখ ২৫ মার্চ ২০০৯) নামের একটি ‘ভুয়া কোম্পানির’ অংশীদার। ওই কোম্পানি ‘ডেসটিনি গ্রুপ নামের একটি চিট ফান্ড কোম্পানির’ সঙ্গে যুক্ত ছিল। “প্রচ্ছায়া লিমিটেড যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার করেছে। ওই অর্থ দিয়ে যুক্তরাজ্যে জুমানা ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড প্রোপার্টিস লিমিটেড (নিবন্ধন সনদ নম্বর ৭৪১৭৪১৭, তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১০) নামের একটি কোম্পানিও খোলা হয়েছে।”
বিশ্বব্যাংকের কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি
টাইগার আইটি নামে এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, যা বিশ্বব্যাংকের নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল, তা তারিক সিদ্দিক ও তাঁর স্ত্রীর আশীর্বাদে সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ পেয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান এনটিএমসি-তে অবৈধভাবে নজরদারি প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে এবং বিভিন্ন প্রকল্প থেকে মোটা অঙ্কের কমিশন নিয়েছে।
ক্ষমতার অপব্যবহার
তারিক সিদ্দিক শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার পরিবারের সদস্য হওয়ায় ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছেন। সরকারি প্রকল্প ও টেন্ডারে নিজেদের পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। বিশেষ করে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) নিয়ন্ত্রণ করেছেন দীর্ঘদিন।
বিভিন্ন খাতে দুর্নীতি
নির্বাচন কমিশন, পাসপোর্ট অফিস, ঢাকা ওয়াসা, এনআইডি প্রকল্পসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় তাদের প্রভাব ছিল।